চেহারায় নাকি তারুণ্য ধরে রাখতে পারে ভিটামিন পি, নাম শুনেছেন কখনো

সুস্থতার জন্য সব ধরনের ভিটামিনই প্রয়োজন। রোজকার খাবার থেকেই আমরা এসব ভিটামিন পাই। তবে ভিটামিন পির নাম খুব একটা শোনা যায় না। এটি আদতে কী ধরনের উপাদান, তা জানেন কি? এর গুণাগুণ সম্পর্কেও জেনে নিন।
উদ্ভিজ্জ খাবার নানা রকম ভিটামিনের উৎস। ভিটামিন পি-ও মেলে উদ্ভিজ্জ উৎস থেকেই। এ প্রসঙ্গে কথা হলো স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের মেডিসিন বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা. তাসনোভা মাহিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, উদ্ভিদের দেহে থাকা বিশেষ ধরনের কিছু জৈবরাসায়নিক উপাদানকে বলা হয় ফ্লাভোনয়েড। অনেক রকম ফ্লাভোনয়েড থাকে উদ্ভিদের দেহে। এই ফ্লাভোনয়েডকেই একসময় বলা হতো ভিটামিন পি।
মানবদেহে কেন প্রয়োজন
এই উপাদানের গুণাগুণ নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে। বিভিন্ন গবেষণার ফলাফল থেকে জানা যায়, ভিটামিন পি বা ফ্লাভোনয়েড আমাদের দেহে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। তার মানে, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ত্বক ও দেহের ভেতরে যেসব পরিবর্তন ঘটে, সেসব সামলাতে সাহায্য করে এই পুষ্টি উপাদান। নিয়মিত গ্রহণ করা হলে হৃদ্রোগ ও ডায়াবেটিসের মতো রোগের ঝুঁকি কমে।
আদতেই কি ভিটামিন
সচরাচর যেসব ভিটামিনের কথা বলা হয়, সেসবের মধ্যে তো ভিটামিন পির নাম নেই। আদতেই কি এটি কোনো ভিটামিন? ডা. তাসনোভা মাহিন বলেন, যখন ফ্লাভোনয়েড আবিষ্কৃত হয়, তখন ধারণা করা হয় যে এটি একধরনের ভিটামিন। সে সময় এর নাম দেওয়া হয় ভিটামিন পি। তবে পরবর্তী সময়ে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা গেছে, অন্যান্য ভিটামিনের সঙ্গে ফ্লাভোনয়েডের পার্থক্য আছে। তাই এটিকে শেষ পর্যন্ত ভিটামিনের দলে রাখা হয়নি।
কোন খাবারে মিলবে এই পুষ্টি
ভিটামিন না হলেও ফ্লাভোনয়েড আমাদের দেহের জন্য উপকারী উপাদান, গবেষণার ফলাফল তেমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে। তাই রোজ ফ্লাভোনয়েডসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া ভালো অভ্যাস। রঙিন ফলমূল, রঙিন শাকসবজি, টক ফলের খোসা, পুদিনাপাতা, সয়া, গ্রিন–টি, জলপাই তেল প্রভৃতি ফ্লাভোনয়েডের উৎস।
শেষ কথা
ফ্লাভোনয়েড আমাদের দেহে কতটা শোষিত হয় এবং শেষ পর্যন্ত তা দেহের কতটা কাজে আসে, সে বিষয়ে গবেষণা চলমান। তবে যেসব উৎস থেকে ফ্লাভোনয়েড পাওয়া যায়, সেসব দারুণ স্বাস্থ্যকর। বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন বা খনিজ উপাদান পাওয়া যায় এসব খাবারের অনেকগুলো থেকেই। কোনোটি থেকে পাওয়া যায় আঁশ। আর জলপাই তেলও স্বাস্থ্যকর। এমন ধরনের খাবার খেলে সত্যিকার অর্থেই আপনি সুস্থ থাকবেন। ওজন থাকবে নিয়ন্ত্রণে। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের মতো বহু জটিল রোগের ঝুঁকিও কমবে।