# Tags
#বাণিজ্য

বেড়েছে গড় মূল্যস্ফীতি, কমেছে খাদ্যে

মার্চ মাসে দেশের মূল্যস্ফীতি সামান্য বেড়ে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে দেশের মূল্যস্ফীতি কমে ৯ দশমিক ৩২ শতাংশে নেমেছিল। রমজান মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে ৮ শতাংশের ঘরে নামলেও গড় মূল্যস্ফীতি বেড়েছে খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের কারণে।

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত মাসিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

গত মার্চে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ হওয়ার মানে হলো, ২০২৪ সালের মার্চে যদি বিভিন্ন ধরনের পণ্য ও সেবা কিনে আপনার সংসারের খরচ চালাতে ১০০ টাকা খরচ হয়, তাহলে এ বছরের মার্চে একই পণ্য ও সেবা কিনে সংসার চালাতে খরচ লাগল ১০৯ টাকা ৩৫ পয়সা। প্রতি ১০০ টাকায় খরচ বেড়েছে ৯ টাকা ৩৫ পয়সা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডিম, আলু, পেঁয়াজের পাশাপাশি শাকসবজির দাম কমায় মূল্যস্ফীতি কমেছে। তবে চাল, ডাল ও তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমলে মূল্যস্ফীতি আরও কমবে। এই জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

মার্চের হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যায়, রোজার মাস মার্চে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশে নেমেছে। ফেব্রুয়ারি মাসেও দেশের খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। বাংলাদেশে দীর্ঘদিন উচ্চখাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল। গত বছর খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ শতাংশের ঘরেও গিয়েছিল। খাদ্য পণ্যের দাম কমায় অর্থনীতিতে বড় স্বস্তি এসেছে।

মার্চে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমলেও বেড়েছে খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের দাম। এ মাসে খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৭ শতাংশে। ফেব্রুয়ারিতেও এ খাতের মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ।

মার্চে দেশে গ্রামাঞ্চলের মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে। মার্চে গ্রামাঞ্চলে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৪১ শতাংশ, ফেব্রুয়ারিতে যা ছিল ৯ দশমিক ৫১ শতাংশ। গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের মার্চে যা ছিল শতকরা ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ। মার্চে গ্রামাঞ্চলের খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি ছিল যথাক্রমে ৮ দশমিক ৮১ ও ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ। ফেব্রুয়ারিতে যা ছিল যথাক্রমে ৯ দশমিক ১৫ ও ৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ। ২০২৪ সালের মার্চে যা ছিল যথাক্রমে ৯ দশমিক ৮৬ ও ৯ দশমিক ৪১ শতাংশ। মার্চে শহরাঞ্চলের মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ, ফেব্রুয়ারিতে যা ছিল ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ। ২০২৪ সালের মার্চে যা ছিল ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ।

মূল্যস্ফীতির সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না মজুরি। বিবিএসের হিসাবে, গত মার্চে জাতীয় মজুরি হার হয় ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। এর মানে হলো, মজুরি যত বেড়েছে, তার চেয়ে বেশি বেড়েছে জিনিসপত্রের দাম। গত ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে জাতীয় মজুরি হার কিছুটা বেড়েছে।

মজুরিনির্ভর বিশাল জনগোষ্ঠীর ওপর মূল্যস্ফীতির চাপ বেশি পড়ে। গ্রাম-শহরনির্বিশেষে ১৪৫টি নিম্ন দক্ষতার পেশার মজুরির ওপর এই হিসাব করে থাকে বিবিএস।

বিবিএস বলছে, দেশের প্রায় ৮৬ শতাংশ মানুষ অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন। এমন কর্মজীবী মানুষের সংখ্যা ছয় কোটির মতো। এ বিষয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর মূল্যস্ফীতি একেবারে স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে না আসলেও অনেকটাই কমেছে। যেহেতু মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে, মজুরির চেয়ে মূল্যস্ফীতি বেশি। এখানে সরকারের সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিগুলোকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। ফ্যামিলি কার্ড বাড়িয়ে কম দামে পণ্য সরবরাহ অব্যাহত রাখতে হবে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *