চোখের পাতা ঝুলে যাওয়ার সমস্যা ড্রুপি আইলিড কেন হয়, সমাধান কী

ড্রুপি আইলিড বা টোসিস অর্থ চোখের পাতা পড়ে যাওয়া। রোগটি শিশু বা প্রাপ্তবয়স্ক উভয়েরই হতে পারে। অনেক শিশু জন্মগতভাবে টোসিস নিয়ে জন্মায়। মূলত দুর্বল চোখের পাতার পেশির কারণে দৃষ্টি ধীর হয়ে এমন হয়। আবার জীবনের যেকোনো পর্যায়ে এ রোগ হতে পারে। তখন দেখা যায় এক বা দুই চোখের পাতা পড়ে আছে আর সহজে খোলা যাচ্ছে না। শুরুতেই চিকিৎসা করাতে হবে। গুরুতর হয়ে গেলে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন পড়ে।
চোখের পাতা ঝুলে যাওয়ার এই সমস্যায় একটি চোখ আক্রান্ত হতে পারে, আবার দুটি চোখও আক্রান্ত হতে পারে। চোখে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পানি আসে। দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হতে থাকে। আক্রান্ত শিশুরা প্রায়ই ভালোভাবে দেখার জন্য তাদের মাথা পেছনে ঝাঁকাতে থাকে। ঘাড় বা কাঁধ উঁচু করে রাখে। কোনো কোনো শিশু তাদের ভ্রু তুলে চোখের মণি মাঝখানে এনে দেখার চেষ্টা করে।
প্রাপ্তবয়স্কদের চোখের পাতা ঝুলে যাওয়ার পেছনে অস্ত্রোপচারের ভুল দায়ী হতে পারে। যেমন চোখের ছানি অস্ত্রোপচারের সময় ভুলবশত চোখের পাতার একটি টেন্ডন যদি কেটে যায়। দুর্ঘটনাজনিত আঘাত থেকেও টেন্ডনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আবার স্নায়বিক বা পেশিসংক্রান্ত রোগের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে। চোখে বা মস্তিষ্কে টিউমারের কারণেও এমনটা হতে পারে।
রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা
দুই চোখেই সমস্যা হলে রোগীর দুই চোখের মধ্যে তুলনা করে চক্ষুবিশেষজ্ঞ সহজেই রোগটি নির্ণয় করতে পারেন। যদি এক চোখে সমস্যা দেখা দেয়, তখন উভয় চোখ প্রভাবিত হয়। রোগীর চোখের স্লিট ল্যাম্প পরীক্ষা করা হয়। এটি উচ্চ-তীব্রতর আলোর একটি পাতলা রশ্মি। ফোকাস করার জন্য একটি কম পাওয়ার মাইক্রোস্কোপ ব্যবহার করতে হয়। ছানিও পরীক্ষা করতে হবে। একই সঙ্গে সকেটের উচ্চতা, টোসিসের তীব্রতা এবং ঝুলে থাকা চোখের পাতার অবশিষ্ট শক্তি নির্ধারণ করতে চোখের পাতা ও সকেটের পরিমাপ করতে হয়।
টোসিসে আক্রান্ত শিশুর প্রথম অবস্থার ছবি তুলে রাখতে হবে এবং পরবর্তী বছরগুলোয় নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করতে হবে। নিয়মিত চক্ষু পরীক্ষায় শিশুর দৃষ্টিশক্তি হ্রাস ও অ্যাম্বলিওপিয়া এড়াতে সাহায্য করবে।
ডা. সৈয়দ এ কে আজাদ: বিভাগীয় প্রধান, চক্ষুরোগ বিভাগ, আল-রাজী হাসপাতাল, ঢাকা